Wednesday, May 31, 2017

বাংলায় পি.এল.সি ( ধারাবাহিক পর্বের চতুর্থ পর্ব )


কিছুদিন আগে বাংলায় পি.এল.সি নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে পোস্ট করা শুরু করেছিলাম । কিন্তু কাজের চাপে কিছুদিন থেকে কোনো পোস্ট করা হয়নি । এজন্য সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । আশা করছি এখন থেকে নিয়মিত পি.এল.সি নিয়ে আলোচনা করা যাবে ।

আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করব টাইমার নিয়ে কারণ পি.এল.সি প্রোগ্রামিং করতে গেলে এই টাইমার সর্ম্পকে জানা খুব জরুরী ।
তো চলুন শুরু করা যাক ।
আমরা নিচের যে ছবি দেখতে পাচ্ছি এগুলোই মোটামুটি পি.এল.সি প্রোগ্রামিং করতে গেলে প্রয়োজন হয় ।

এখন আমরা একটা একটা করে বিস্তারিত আলোচনা করব যাতে এগুলো আপনারা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারেন ।

১) অন ডিলে টাইমারঃ 
 এটা হলো অন ডিলে টাইমার এর সিম্বল । অন ডিলে টাইমার হলো এমন একটা টাইমার যা আপনি যে নির্দিষ্ট সময় সেট করে দিবেন সেই নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর টাইমার অন হবে (অর্থাৎ ০ থেকে ১ হবে ) ।

ও হ্যাঁ অন ডিলে টাইমার আবার দুইপ্রকার
ক) NOTC (Normally Open Timed Close)= এটা নরমালি ওপেন থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ক্লোজ হয় ।
খ) NCTO (Normally closed, Timed open)= এটা নরমালি ক্লোজ থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ওপেন হয় ।

উদাহরণ স্বরুপ বলা যেতে পারে আপনি একটি মটর অন করবেন কিন্তু মটর টি অন হবে সুইচ অন করার ৫ সেকেন্ড পর ।
নিচের ছবি টি লক্ষ্য করুনঃ

ক) NOTC (Normally Open Timed Close)= এটা নরমালি ওপেন থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ক্লোজ হয় ।
 


দেখুন টাইমার টি অন হওয়ার পর ৫ সেকেন্ড পর কনট্যাক্ট ক্লোজ হয়েছে , অর্থাৎ মটর টি বা যেটাতে কানেকশন দেয়া আছে সেটি ৫ সেকেন্ড পর অন হবে ।
খ) NCTO (Normally closed, Timed open)= এটা নরমালি ক্লোজ থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর অন হয় বা ওপেন হয় ।
আবার আপনি যদি এমনটি করতে চান যেন টাইমার অন হওয়ার ৫ সেকেন্ড পর মটর অফ করবেন তাহলে শুধু NCTO ব্যবহার করলেই হয়ে যাবে ।
নিচের ছবিটি লক্ষ্য করুন 


২) অফডিলে টাইমারঃ
 
এই হলো অফ ডিলে টাইমারের সিম্বল ।  এটা জাস্ট অন ডিলে টাইমারের অপোজিট ।
অফ ডিলে টাইমার আবার দুইপ্রকার
ক) NOTO (Normally Open, Timed Open)= এটা নরমালি ওপেন থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ওপেন থাকে ।
খ) NCTO (Normally closed, Timed Closed)= এটা নরমালি ক্লোজ থাকে , একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ক্লোজ থাকে ।
নিচের ছবি দুইটি লক্ষ্য করুন , আশা করছি বুঝতে পারবেন ।

ক) NOTO (Normally Open, Timed Open):
 

দেখুন কয়েল পাওয়ার অফ হওয়ার ও ৫ সেকেন্ড পর কনট্যাক্ট ওপেন হয়েছে অর্থাৎ যতক্ষণ টাইম সেট করে দিবো ততক্ষণ পর্যন্ত কনট্যাক্ট ক্লোজ থাকবে NOTO তে ।
খ) NCTO (Normally closed, Timed Closed):
 
 
এই ধরণের কনট্যাক্ট নরমালি ক্লোজ থাকবে যখন কয়েল আনপাওয়ার্ড থাকবে । কয়েল এনার্জাইজড হওয়ার সাথে সাথেই কনট্যাক্ট ওপেন হবে কিন্তু কয়েল ডিএনার্জাইজড হওয়ার পর আপনি যতক্ষণ সময় সেট করবেন ততক্ষণ পর ক্লোজ হবে ।
যদিও অফ ডিলে টাইমার এর ব্যবহার অন ডিলে টাইমারের চেয়ে অনেক কম ।

৩) অন-অফ ডিলে টাইমারঃ
 অন অফ ডিলে টাইমার এর সিম্বল এটা । এটাও মূলত একধরণের টাইমার যেখানে একটা টাইমার দিয়েই আপনি অন ডিলে আর অফ ডিলে টাইমার ব্যবহার করতে পারেন ।
ধরা যাক আপনি টাইমার দিয়ে একটি কয়েল অন করাতে চাচ্ছেন, আবার অফ ও করাতে চাচ্ছেন এবং টাইম সেট করে দিলেন অন টাইম ৫ সেকেন্ড এবং অফ টাইম ৭ সেকেন্ড । সেক্ষেত্রে টাইমার অন করার ৫ সেকেন্ড পর কয়েল অন হবে এবং টাইমার অফ করার ও ৭ সেকেন্ড পর কয়েল অফ হবে ।

৪) রিটেনটিভ অন ডিলে টাইমারঃ
রিটেনটিভ অন ডিলে টাইমার এর ক্ষেত্রে দুইটি ইনপুট আছে । আপনি একটি ইনপুট বা ট্রিগার দিয়ে শুধু টাইমার অন করাতে পারবেন এরপর আপনি যতবার ট্রিগারে ভোল্টেজ দেন না কেন টাইমার অন থাকবে । টাইমার অফ করার জন্য রিসেট নামক আর একটা ইনপুট আছে । এটাতে ০ থেকে ১ হলেই অর্থাৎ ভোল্টেজ দিলেই টাইমার অফ হয়ে যাবে । 

৫)  উইপিং রিলে টাইমারঃ 
 এটা আর এক ধরণের মজার টাইমার যেখানে আপনি যতক্ষণ টাইমারে টাইম সেট করে দিবেন ততক্ষণই টাইমার অন থাকবে । ধরুণ আপনি টাইমার ১০ সেকেন্ড সেট করলেন এখন টাইমার এর ইনপুট আপনি যখন অন করলেন বা ০ থেকে ১ করলেন সাথে সাথেই আউটপুট ১ হবে কিন্তু ১০ সেকেন্ড পর আবার ০ হয়ে যাবে । অর্থাৎ যতক্ষণ টাইম সেট করা থাকবে ততক্ষণই টাইমার অন থাকবে ।

৬) উইকলি টাইমারঃ এই হলো আর একধরণের টাইমার ।
 যার সিম্বল এ ধরণের । এটা দিয়ে সপ্তাহের যে কোনো দিন যতক্ষণ ইচ্ছা টাইমার অন এবং যতক্ষণ ইচ্ছা টাইমার অফ রাখতে পারবেন । নিচের ছবিটি দেখলে কিছুটা বুঝতে পারবেন ।

৭) ইয়ারলি টাইমারঃ 
 এই ধরণের টাইমারে একটি অন আর অফ ডেট থাকে । আপনি নির্দিষ্ট বছর , নির্দিষ্ট দিনে , নির্দিষ্ট সময়ে টাইমার অন করতে পারবেন আবার আপনার পছন্দের সময়ে টাইমার অফ করতে পারবেন । সিমেন্স এর লোগো পি.এল.সি তে জানুয়ারি ১, ২০০০ সাল থেকে ডিসেম্বর ৩১, ২০৯৯ পর্যন্ত সিলেক্ট করতে পারবেন ।

আমাদের সাধারনত সবচেয়ে বেশি লাগে ১ আর ২ নাম্বার টাইমার । মোটামুটি এই সব টাইমার দিয়ে পি.এল.সির প্রোগ্রাম করা হয়ে থাকে ।
যখন উদাহরণ দেখবো তখন আরো বিষয়গুলো ক্লিয়ার হবে ।
সবাই ভাল থাকবেন ।

No comments:

Post a Comment